প্রজেক্ট চন্দ্রদ্বীপ
মূল বক্তব্য- সম্পূর্ণ
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে
এই মিশন । বহু প্রমান ও সাক্ষীর
ও বহু
মানুষের অক্লান্ত অনুরোধে
এই মিশন শুরু করার
পরিকল্পনা করা হয়েছে ।
সম্প্রতি এই অঞ্চল ভ্রমনকালে প্রচুর ঐতিহাসিক
নিদর্শন ও সাক্ষ্য- প্রমান খুজে
পাই। দেশে ফিরে এই মহান ও সুপ্রাচিন
ইতিহাস কোন ইতিহাস বই বা
উইকি এর পাতায় না
খুজে পেয়ে ভীষণ
হতাশ হই ।
হয়তো
ভবিষ্যতের আরও কিছু
বছর পরে এই
ইতিহাস পুরোপুরি ধুয়ে-মুছে যাবে । সমাজ , বাকি বিশ্ব , বাংলাদেশের - বরিশালের
মানুষ ও বিশেষ করে
বাঙালি হিন্দু নিজের
ইতিহাসের এই গৌরবান্বিত অধ্যায় চিরকালের
জন্যে হারিয়ে ফেলবেন,কারন ৭০
% ইতিহাস বর্তমানেই মুছে গেছে
বলে অনুমান সেই অঞ্ছলের কিছু
বেশ শিক্ষিত হিন্দু ও মুসলমান
মানুষের। তাই এই
অনুসন্ধান মিশনে আরও বিলম্ব অভিপ্রেত
নয় ।
প্রেক্ষাপট –
অতি প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষ ও বঙ্গভুমি ও
হিন্দু রাজগণ শাসিত হয়েছে । খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে
প্রায় ১২০৩ -১৩০০ শতাব্দী অব্দি
মহান বীর
হিন্দু রাজগণ নিরাপদে
চন্দ্রদ্বীপ শাসন করেছিলেন। এমনকি ঠিকঠাক অনুসন্ধান করলে এই অঞ্চলে ৫০০০ বছরের পূর্বেও খুব বড়
হিন্দু সভ্যতার ইতিহাস খুজে পাওয়া যাবে , এই ধারনা পোষণ
করেন বহু মানুষ ও
ঐতিহাসিক । এমনকি বখতিয়ার খিলজির বঙ্গভুমি অধিকারের সময় থেকে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের শাসনকাল অব্দি চন্দ্রদ্বীপ হিন্দু রাজাদের দ্বারা শাসিত
হয়েছিল । এই দ্বীপের
বহু অংশ আজও সারা পৃথিবীর কাছে অজানা ও রহস্যময় । বরিশালের বেশিরভাগ অঞ্চল আজও
মধ্য আমেরিকা ও আফ্রিকার অরণ্য ও জলাভূমির থেকেও অতি- দুর্গম । কিন্তু বাঙালি
জাতি সেই দুর্গমতা কাটিয়েও
এই সমস্ত অঞ্চলে
বসতি গড়ে তুলেছিল , যার খোজ আজও
পাওয়া যায় । আজকের বরিশালের ও তার আশেপাশে
দ্বীপ আজও আছে
যেখানে প্রাচীন আদিবাসীগণ
বছরে- ২ বছরে একবার মাত্র শহরে
আসেন নৌকা সহযোগে
এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য
সংগ্রহ করে আবার দ্বীপে
ফেরত চলে যান ১-২ বছরের জন্যে । এই
মিশন সেই আদি ও অজানা
দ্বীপ ও দ্বীপবাসী ও সমগ্র চন্দ্রদ্বীপের
মহান ইতিহাস কে বাকি
দুনিয়া ও বিশেষ করে বাঙালি
বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে। যদিও বাংলাদেশের ও ভারতীয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজটি খুব কঠিন , সেই
জন্যে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার ,
চন্দ্রদ্বীপের মানুষ ও বাঙালি ও ইতিহাস
উৎসাহী মানুষের সাহায্য প্রয়োজনীয় হতে পারে ।
লক্ষ্য –
চন্দ্রদ্বীপের বাঙালীর সুপ্রাচীন ও সাম্প্রতিক
ইতিহাস ও কিছু
বহু চর্চিত রহস্য অনুসন্ধান
করাই এই মিশনের
লক্ষ্য । মিশনের কোন
আর্থিক বা রাজনিতিক কোন লক্ষ্য নেই ।
বাঙালি জাতির অনাবিষ্কৃত ও ১০০
% সত্য
ও তথ্য নির্ভর ইতিহাস
অনুসন্ধান এই মিশনের
অভিপ্রেত লক্ষ্য । সুপ্রাচীন
কিছু রহস্যময় ঘটনা
ছাড়াও মধ্যযুগের ও বিভিন্ন সময়ের
ইতিহাস নিয়ে অনুসন্ধান ও
তার সাথে প্রমান এবং
ঐতিহাসিক নিদর্শন অনুমতি সাপেক্ষে সংগ্রহ
করা হবে । এর সাথে সাথে বাংলাদেশের
মুক্তিসংগ্রামে বরিশালের হিন্দু ( বিশেষ করে
হিন্দু নমশূদ্র জাতি ) জাতির অত্যন্ত
কম আলোকপ্রাপ্ত সংগ্রামের ও
বলিদানের ইতিহাসের ওপর আলোকপাত করা হবে । যা আগে প্রায় কোনদিনই কেউ করেনি ।
অগ্রাধিকার –
প্রথম পর্যায়ে নিজ চোখে দেখা ও এলাকার
বিভিন্ন ধর্মমতের শিক্ষিত মানুষের
দ্বারা বর্ণিত ইতিহাস ও তার
সহজলভ্য সাক্ষ্য –প্রমান-তথ্য গুলোকেই
অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।
এছারাও
পাকিস্তানের বিপক্ষে ভাষা- মুক্তিযুদ্ধে
এই এলাকার নিম্ন বর্ণের হিন্দু অবদান ও বলিদান সম্পর্কিত
ইতিহাসকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।
পরবর্তীতে মিশন বাংলাদেশের আরও দুর্গম এলাকার দুষ্প্রাপ্য আদি বাঙ্গালি ইতিহাসের আরও প্রমান
সহ অনুসন্ধান দেবে ।
প্রথম পর্যায়ের অনুসন্ধানে যে
সমস্ত বিষয় গুলো অগ্রাধিকার পাবে –
১- চন্দ্রদ্বীপের উৎপত্তি ও সুপ্রাচীন ইতিহাসের
প্রমান
২- ভূগোল
তথ্যের সাথে ইতিহাসিক কিংবাদন্তির তুলনার প্রমান
৩-
চন্দ্রদ্বীপের রাজবংশগণ ও তাদের কীর্তি সমূহের প্রমান
৪-চন্দ্রদ্বীপের
রাজবংশগণ ও তাদের সেনা, দুর্গ ও যুদ্ধ অস্ত্রের প্রমান
৫-সেই সময়ের
শিল্প – বাণিজ্য – ধনরত্ন ও তার প্রমান
৬-দুরগা
সাগরের ইতিহাস ও তার প্রমান
৭- ভগবান
শাম্যারাইল শিবের ইতিহাস ও তার প্রমান
৮-মানসী মনসা
দেবির ইতিহাস ও তার প্রমান
৯- দেবী
কাত্যয়নি সম্পর্কিত ইতিহাস ও তার প্রমান
১০- দক্ষিণ
চক্র ঠাকুর ও ভগবান মদনগোপাল সম্পর্কিত ইতিহাস ও তার প্রমান
১১- এই অঞ্চলে
মুক্তিযুদ্ধে নমশূদ্র হিন্দু যুবকদের দ্বারা কতৃক
উচ্চবর্ণ হিন্দু ও মুসলমান বাঙালি রমণীদের সন্মান রক্ষা ও আত্মবলিদান ( পাকিস্তানি নরখাদক বাহিনীর হাত থেকে ) ও তার
প্রমান । (মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই
ঘটনা ব্রাত্য কেন ? )
1২- দুর্গম ও
খুব কম আলোকপ্রাপ্ত এলাকাগুলিতে আজও বর্তমান
নমশূদ্র হিন্দু প্রভাব ও
প্রতিপত্তি ও ধন-সম্পদের প্রমান ।
১৩- মা সাদা
কালির রহস্য ও প্রমান ।
১৪-
কীর্তনখোলা নদীতে রহস্য জনক কামান – শব্দ ও তার গবেষণা ও তার পিছনের কিনবাদন্তির
ইতিহাস ও তার প্রমান ( ডিসকভারী চ্যানেল
বিখ্যাত)।
১৬-
বৌ-ঠাকুরানীর দীঘি ও চাঁদসী গ্রামের জমিদার বংশগুলির রহস্যময় ইতিহাস ও তার প্রমান
।
১৫- বিখ্যাত চাঁদসী চিকিৎসা পধ্যতি ( শতাব্দী প্রাচীন গৌরনদীর চাঁদসী গ্রামের পদ্ম
বিশ্বাস আবিষ্কৃত ও কুষ্টিয়ার বিশ্বস্বর পোদ্দার দ্বারা প্রচারিত ) ও তার মাধ্যমে যে
কোন দুরারোগ্য রোগ- ব্যাধি নিরাময়ের
সাক্ষ্য ও প্রমান । ( আদিম
চন্দ্রদ্বীপের চিকিৎসকগণ দ্বারা
এই বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসা প্রণালি আবিষ্কৃত , যা আজ অনেকটাই ধামাচাপা ও
রহস্যময় )।
১৬- চন্দ্রদ্বীপের
অবশিষ্ট অল্প সংখ্যক হিন্দু হিন্দু মন্দিরগুলির ঐতিঝ্য ও ইতিহাস রক্ষায় ওই এলাকার
কিছু মুসলমান জনগনের প্রচেষ্টা ও তাদের ইতিহাস উদ্ধারের আবেদন ।
১৭- রহস্যময়ী
সন্ধ্যা নদির ইতিহাস ও নৌকা- প্রতিযোগিতা ও তার পিছনের ইতিহাস।
১৮-
চন্দ্রদ্বীপের ও আশেপাশের অঞ্চলে (বর্তমান বরিশাল ) নমশূদ্র হিন্দু জাতির পুনঃ আর্থিক উত্থানের প্রমান ও কারন ।
১৯- দেবী রাজ
মাতা মা রাজলক্ষ্মীর ভুবনমোহিনী মূর্তি
জলাশয় থেকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা (
কল্পিত ও বহু কথিত যে এই মূর্তি উদ্ধারে
বঙ্গ সহ ভারত আজ বিশ্বে সর্বশ্রেষ্ঠ
ধনী সম্পদায় হিসাবে পরিচিত হতো )।
মায়ের কৃপায় সেই জলাশয় ইতিমধ্যেই আবিষ্কার
করে ফেলেছেন এলাকার কিছু মানুষ ।
প্রস্তাবিত
রূপরেখা –
বিভিন্ন
পর্যায় এই প্রকল্প রুপায়ন করার প্রচেষ্টা করতে হবে-
১- বিভিন্ন বই
থেকে তথ্য সংগ্রহ ।
২-এলাকার ধর্ম
বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের
সহযোগিতা নেয়া হবে । ওই বয়স্ক লোক ও পুরনো বংশগুলোর ও ওই এলাকার ইতিহাস চর্চারত দেশবিদেশের বিভিন্ন মানুষকে প্রমাণগুলো সম্পকে অবহিত করা ও
তাদের সাথে কথাবার্তা ও ইনটারভিউ করা।
৩-সহজলভ্য
প্রমান গুলি কে অতিদ্রুত ক্যামেরা
বন্ধি ।
৪-ইতিমধ্যে
পাওয়া ঐতিহাসিক অস্তিত্বের
প্রমানগুলো সেখানেই সংরক্ষিত
করার বিষয় আবেদন ।
৫- ওই এলাকা
ভ্রমন করে আরও প্রমান সংগ্রহ ।
পরিকাঠামো – এই মিশনের সাহায্যকারী বাক্তি বা সংস্থাকেই মিশনের পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব দেওয়া
হবে । তারাই মিশনের কাজে কর্মী নিয়োগ করবেন ও বিভিন্ন ভাবে আদেশ ও উপদেশ দিতে পারবেন ।
পরিকল্পনার
সময়সীমা- প্রাথমিক ভাবে এই মিশনের ১ ম পর্যায়ের
সময়-সীমা ২- বছর লাগতে পারে ,
এর মধ্যে কমপক্ষে ৬ মাস এলাকায় থেকে
গবেষণা- কাজ করা যেতে পারে । অতি দ্রুত এই মিশন শুরু না হলে ক্রমে আরও ইতিহাস
লুপ্ত হয়ে যেতে পারে ।
উদ্যোগ- বাক্তিগত উদ্যোগে আমি এই গবেষণার সাথে বহু কাল যুক্ত ও ৭-৮ মাস পূর্বে বাংলাদেশে
ভ্রমণকালে প্রচুর অজানা ও অনাবিষ্কৃত ধামাচাপা পরা ইতিহাসের সন্ধান পেয়েছি । তবে বাক্তিগত বা একক
প্রচেষ্টায় একটি বিশাল
দুর্গম এলাকার ২০০০-৩০০০ বছরের
ইতিহাস বের করা খুব কঠিন বলেই মনে করি , সেই উদ্দেশে আজ এই
প্রোজেক্ট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি ।
নজরদারি –
মিশন শুরুর ১ মাসের মধ্যেই এই মিশনের
কাজকর্ম ও সফলটার ওপর নজরদারির জন্যে
কমিটি গঠন করা হবে । এই
মিশনের সাহায্যকারী বাক্তি বা সংস্থাকেই নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া
হবে ।
সম্ভাব্য ফলাফল -
প্রথম পর্যায়ের ২ বছরের মিশন ধর্ম- বর্ণ
নির্বিশেষে বাঙালির মধ্যে
ব্যাপক সারা ফেলবে বলে মনে করি ।
বেশ কিছু মানুষ আরও বাঙালি ও তাদের ইতিহাস নিয়ে
উৎসাহিত হবেন । বাঙালি ও বিশেষ করে নিম্নবর্ণ বাঙালি
উপহার পাবে তাদের গৌরবান্বিত ইতিহাস ।
এছারাও বাংলাদেশের
বরিশাল ( বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ )
বাঙালি ও সারা দুনিয়ার হিন্দুদের
জন্যে একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকিতিক দুর্গম
ভ্রমনস্তল হিসাবে পরিচিত হবে ।
যার মাধ্যমে
ওই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও হতে পারে ।
নতুন করে হিন্দু মন্দিরগুলো ও ঐতিহাসিকস্থল গুলো পরিচিতি পাবে ।
মুখবন্ধ- এই
প্রোজেক্ট কোন রাজা বা শাসক বা কোন ধর্ম বা বর্ণ বা তাদের ইতিহাসের তুলনায়
প্রাগৈতিহাসিক ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও তাদের মহান ইতিহাস কে প্রাধান্য দেবে । এই ইতিহাসের
পুনঃ উদ্ধারের জন্নে সকল
বাঙ্গালীর সাহায্য কামনা করি ।
সুজয় কুণ্ডু
কোলকাতা
ফোণ-
৯২৩১৯৪২৬০১
THIS PROJECT'S WRITEUP COPYRIGHTED TO BISAS
(Bangiya Itihas o Sanskriti Anusandhan Samiti)
AND SUJAY KUNDU
(Bangiya Itihas o Sanskriti Anusandhan Samiti)
AND SUJAY KUNDU
এই প্রোজেক্টের সফলতা কামনা করি
ReplyDelete