Sunday 9 September 2012

PROJECT CHANDRADIP BY SUJAY KUNDU


প্রজেক্ট  চন্দ্রদ্বীপ

মূল বক্তব্য-   সম্পূর্ণ   ঐতিহাসিক  দৃষ্টিকোণ  থেকে  এই  মিশন । বহু প্রমান ও সাক্ষীর ও  বহু  মানুষের  অক্লান্ত  অনুরোধে  এই  মিশন শুরু  করার  পরিকল্পনা  করা  হয়েছে ।
সম্প্রতি এই অঞ্চল  ভ্রমনকালে প্রচুর  ঐতিহাসিক  নিদর্শন ও  সাক্ষ্য- প্রমান খুজে পাই। দেশে  ফিরে এই মহান ও সুপ্রাচিন ইতিহাস  কোন ইতিহাস  বই  বা উইকি এর  পাতায়  না  খুজে  পেয়ে  ভীষণ  হতাশ  হই ।
হয়তো ভবিষ্যতের  আরও  কিছু  বছর  পরে  এই  ইতিহাস  পুরোপুরি  ধুয়ে-মুছে যাবে ।  সমাজ , বাকি বিশ্ব , বাংলাদেশের - বরিশালের মানুষ ও  বিশেষ  করে  বাঙালি  হিন্দু   নিজের  ইতিহাসের এই গৌরবান্বিত অধ্যায় চিরকালের  জন্যে  হারিয়ে ফেলবেন,কারন ৭০ %  ইতিহাস বর্তমানেই  মুছে গেছে  বলে  অনুমান সেই  অঞ্ছলের কিছু  বেশ  শিক্ষিত হিন্দু ও মুসলমান মানুষের।  তাই  এই  অনুসন্ধান মিশনে আরও  বিলম্ব  অভিপ্রেত  নয়

প্রেক্ষাপট – অতি প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষ    বঙ্গভুমি ও  হিন্দু  রাজগণ শাসিত  হয়েছে । খ্রিস্টপূর্ব  ৩০০০ থেকে  প্রায়  ১২০৩ -১৩০০ শতাব্দী অব্দি মহান  বীর  হিন্দু  রাজগণ  নিরাপদে   চন্দ্রদ্বীপ  শাসন  করেছিলেন। এমনকি ঠিকঠাক অনুসন্ধান করলে এই  অঞ্চলে ৫০০০ বছরের পূর্বেও  খুব বড়  হিন্দু সভ্যতার ইতিহাস খুজে পাওয়া যাবে , এই  ধারনা পোষণ  করেন  বহু  মানুষ ও  ঐতিহাসিক ।   এমনকি  বখতিয়ার খিলজির  বঙ্গভুমি অধিকারের সময় থেকে মুঘল  সম্রাট জাহাঙ্গিরের শাসনকাল  অব্দি চন্দ্রদ্বীপ  হিন্দু রাজাদের দ্বারা  শাসিত  হয়েছিল ।  এই  দ্বীপের   বহু অংশ  আজও  সারা পৃথিবীর কাছে  অজানা ও রহস্যময় । বরিশালের বেশিরভাগ  অঞ্চল আজও  মধ্য  আমেরিকা ও আফ্রিকার  অরণ্য ও জলাভূমির থেকেও  অতি- দুর্গম । কিন্তু  বাঙালি  জাতি সেই  দুর্গমতা  কাটিয়েও  এই  সমস্ত  অঞ্চলে  বসতি গড়ে তুলেছিল , যার খোজ আজও  পাওয়া যায়   আজকের  বরিশালের ও তার  আশেপাশে  দ্বীপ  আজও  আছে  যেখানে  প্রাচীন  আদিবাসীগণ  বছরে- ২ বছরে  একবার মাত্র  শহরে  আসেন  নৌকা  সহযোগে  এবং  প্রয়োজনীয়  দ্রব্য  সংগ্রহ  করে আবার  দ্বীপে  ফেরত চলে  যান  ১-২ বছরের জন্যে ।  এই  মিশন  সেই আদি  ও অজানা  দ্বীপ ও দ্বীপবাসী ও  সমগ্র  চন্দ্রদ্বীপের  মহান   ইতিহাস কে  বাকি  দুনিয়া  ও বিশেষ  করে বাঙালি  বিশ্বের  কাছে  তুলে ধরবে। যদিও  বাংলাদেশের ও ভারতীয়  বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজটি খুব  কঠিন , সেই  জন্যে  ভারত ও বাংলাদেশ সরকার , চন্দ্রদ্বীপের  মানুষ ও বাঙালি ও ইতিহাস উৎসাহী  মানুষের  সাহায্য প্রয়োজনীয়  হতে পারে ।


লক্ষ্য – চন্দ্রদ্বীপের বাঙালীর  সুপ্রাচীন ও  সাম্প্রতিক  ইতিহাস    কিছু   বহু চর্চিত  রহস্য  অনুসন্ধান  করাই   এই  মিশনের  লক্ষ্য ।  মিশনের  কোন  আর্থিক বা রাজনিতিক  কোন  লক্ষ্য নেই ।  বাঙালি জাতির অনাবিষ্কৃত  ও ১০০ %  সত্য    তথ্য নির্ভর  ইতিহাস  অনুসন্ধান  এই  মিশনের  অভিপ্রেত  লক্ষ্য ।   সুপ্রাচীন  কিছু  রহস্যময়  ঘটনা   ছাড়াও   মধ্যযুগের ও বিভিন্ন  সময়ের  ইতিহাস নিয়ে  অনুসন্ধান    তার  সাথে  প্রমান এবং   ঐতিহাসিক  নিদর্শন  অনুমতি সাপেক্ষে  সংগ্রহ  করা হবে  । এর সাথে সাথে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে বরিশালের হিন্দু ( বিশেষ করে  হিন্দু নমশূদ্র জাতি ) জাতির অত্যন্ত  কম আলোকপ্রাপ্ত  সংগ্রামের ও বলিদানের ইতিহাসের ওপর আলোকপাত  করা  হবে । যা আগে প্রায় কোনদিনই কেউ করেনি ।

অগ্রাধিকার – প্রথম পর্যায়ে নিজ চোখে  দেখা ও এলাকার বিভিন্ন ধর্মমতের শিক্ষিত মানুষের  দ্বারা  বর্ণিত ইতিহাস ও তার সহজলভ্য  সাক্ষ্য –প্রমান-তথ্য  গুলোকেই   অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।
এছারাও পাকিস্তানের বিপক্ষে  ভাষা- মুক্তিযুদ্ধে এই  এলাকার নিম্ন বর্ণের  হিন্দু অবদান ও বলিদান সম্পর্কিত ইতিহাসকেও  অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।
পরবর্তীতে  মিশন বাংলাদেশের আরও দুর্গম এলাকার  দুষ্প্রাপ্য আদি বাঙ্গালি  ইতিহাসের  আরও  প্রমান সহ অনুসন্ধান দেবে ।

প্রথম পর্যায়ের  অনুসন্ধানে যে সমস্ত বিষয় গুলো অগ্রাধিকার পাবে –
১-  চন্দ্রদ্বীপের উৎপত্তি ও সুপ্রাচীন ইতিহাসের প্রমান
২- ভূগোল তথ্যের সাথে  ইতিহাসিক কিংবাদন্তির  তুলনার প্রমান
৩- চন্দ্রদ্বীপের রাজবংশগণ ও তাদের কীর্তি সমূহের প্রমান
৪-চন্দ্রদ্বীপের রাজবংশগণ ও তাদের সেনা, দুর্গ ও যুদ্ধ অস্ত্রের প্রমান
৫-সেই সময়ের শিল্প – বাণিজ্য – ধনরত্ন ও তার প্রমান
৬-দুরগা সাগরের ইতিহাস ও তার প্রমান
৭- ভগবান শাম্যারাইল শিবের ইতিহাস ও তার প্রমান
৮-মানসী মনসা দেবির ইতিহাস ও তার  প্রমান
৯- দেবী কাত্যয়নি সম্পর্কিত ইতিহাস ও তার প্রমান
১০- দক্ষিণ চক্র ঠাকুর ও ভগবান মদনগোপাল সম্পর্কিত ইতিহাস ও তার প্রমান
১১- এই অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে  নমশূদ্র  হিন্দু যুবকদের দ্বারা  কতৃক  উচ্চবর্ণ  হিন্দু  ও মুসলমান বাঙালি রমণীদের  সন্মান রক্ষা ও আত্মবলিদান  ( পাকিস্তানি নরখাদক বাহিনীর হাত থেকে ) ও তার প্রমান । (মুক্তিযুদ্ধের  ইতিহাসে এই ঘটনা  ব্রাত্য  কেন ? )
1২- দুর্গম ও খুব কম আলোকপ্রাপ্ত এলাকাগুলিতে আজও বর্তমান  নমশূদ্র  হিন্দু প্রভাব ও প্রতিপত্তি ও ধন-সম্পদের প্রমান ।
১৩- মা সাদা কালির রহস্য ও প্রমান 
১৪- কীর্তনখোলা নদীতে রহস্য জনক কামান – শব্দ ও তার গবেষণা ও তার পিছনের কিনবাদন্তির ইতিহাস ও তার প্রমান  ( ডিসকভারী চ্যানেল বিখ্যাত)।

১৬- বৌ-ঠাকুরানীর দীঘি ও চাঁদসী গ্রামের জমিদার বংশগুলির রহস্যময় ইতিহাস ও তার প্রমান ।
১৫- বিখ্যাত   চাঁদসী     চিকিৎসা পধ্যতি (  শতাব্দী প্রাচীন   গৌরনদীর  চাঁদসী    গ্রামের  পদ্ম বিশ্বাস আবিষ্কৃত ও  কুষ্টিয়ার  বিশ্বস্বর পোদ্দার দ্বারা  প্রচারিত )    তার মাধ্যমে যে কোন দুরারোগ্য রোগ- ব্যাধি নিরাময়ের  সাক্ষ্য ও প্রমান । ( আদিম  চন্দ্রদ্বীপের  চিকিৎসকগণ  দ্বারা  এই বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসা প্রণালি আবিষ্কৃত , যা আজ অনেকটাই ধামাচাপা ও রহস্যময় )।
১৬- চন্দ্রদ্বীপের অবশিষ্ট অল্প সংখ্যক  হিন্দু  হিন্দু মন্দিরগুলির  ঐতিঝ্য ও ইতিহাস রক্ষায়  ওই এলাকার  কিছু  মুসলমান জনগনের  প্রচেষ্টা ও তাদের ইতিহাস উদ্ধারের আবেদন 
১৭- রহস্যময়ী সন্ধ্যা নদির ইতিহাস ও নৌকা- প্রতিযোগিতা ও তার পিছনের ইতিহাস।
১৮- চন্দ্রদ্বীপের ও আশেপাশের অঞ্চলে (বর্তমান বরিশাল ) নমশূদ্র হিন্দু জাতির পুনঃ আর্থিক  উত্থানের প্রমান ও কারন ।
১৯- দেবী রাজ মাতা মা রাজলক্ষ্মীর ভুবনমোহিনী মূর্তি  জলাশয় থেকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা  ( কল্পিত ও বহু কথিত যে  এই মূর্তি উদ্ধারে বঙ্গ সহ ভারত  আজ বিশ্বে  সর্বশ্রেষ্ঠ  ধনী সম্পদায়  হিসাবে পরিচিত হতো )। মায়ের কৃপায় সেই জলাশয় ইতিমধ্যেই  আবিষ্কার করে ফেলেছেন এলাকার  কিছু  মানুষ ।




প্রস্তাবিত রূপরেখা –
বিভিন্ন পর্যায় এই প্রকল্প রুপায়ন করার প্রচেষ্টা করতে হবে-
১- বিভিন্ন বই থেকে তথ্য সংগ্রহ ।
২-এলাকার ধর্ম বর্ণ  নির্বিশেষে  মানুষের  সহযোগিতা নেয়া হবে । ওই বয়স্ক লোক ও পুরনো বংশগুলোর ও ওই এলাকার  ইতিহাস চর্চারত দেশবিদেশের  বিভিন্ন মানুষকে প্রমাণগুলো সম্পকে অবহিত করা ও তাদের সাথে কথাবার্তা ও ইনটারভিউ করা।
৩-সহজলভ্য প্রমান গুলি কে অতিদ্রুত  ক্যামেরা বন্ধি 
৪-ইতিমধ্যে পাওয়া ঐতিহাসিক  অস্তিত্বের প্রমানগুলো  সেখানেই  সংরক্ষিত  করার বিষয় আবেদন ।
৫- ওই এলাকা ভ্রমন করে আরও প্রমান সংগ্রহ ।

পরিকাঠামো –  এই মিশনের সাহায্যকারী  বাক্তি বা সংস্থাকেই মিশনের   পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব  দেওয়া  হবে । তারাই মিশনের কাজে কর্মী নিয়োগ করবেন  ও বিভিন্ন ভাবে আদেশ ও উপদেশ  দিতে পারবেন ।

পরিকল্পনার সময়সীমা- প্রাথমিক ভাবে এই মিশনের ১ ম পর্যায়ের  সময়-সীমা  ২- বছর লাগতে পারে , এর  মধ্যে কমপক্ষে ৬ মাস এলাকায় থেকে গবেষণা- কাজ করা যেতে পারে । অতি দ্রুত এই মিশন শুরু না হলে ক্রমে আরও ইতিহাস লুপ্ত হয়ে যেতে পারে ।



উদ্যোগ-  বাক্তিগত উদ্যোগে  আমি এই গবেষণার সাথে বহু কাল যুক্ত ও  ৭-৮ মাস পূর্বে  বাংলাদেশে  ভ্রমণকালে প্রচুর অজানা ও অনাবিষ্কৃত ধামাচাপা পরা  ইতিহাসের সন্ধান পেয়েছি । তবে বাক্তিগত বা একক প্রচেষ্টায়  একটি  বিশাল  দুর্গম এলাকার  ২০০০-৩০০০ বছরের ইতিহাস বের করা খুব কঠিন বলেই মনে করি , সেই উদ্দেশে  আজ এই  প্রোজেক্ট তৈরির  উদ্যোগ  নিয়েছি ।
নজরদারি – মিশন শুরুর ১ মাসের মধ্যেই এই মিশনের  কাজকর্ম ও সফলটার ওপর নজরদারির জন্যে  কমিটি  গঠন করা হবে । এই মিশনের  সাহায্যকারী  বাক্তি বা সংস্থাকেই নজরদারির দায়িত্ব  দেওয়া  হবে ।

সম্ভাব্য  ফলাফল -  প্রথম পর্যায়ের ২ বছরের  মিশন  ধর্ম- বর্ণ  নির্বিশেষে   বাঙালির   মধ্যে  ব্যাপক  সারা ফেলবে বলে মনে করি । বেশ কিছু মানুষ আরও বাঙালি ও  তাদের  ইতিহাস নিয়ে  উৎসাহিত হবেন ।  বাঙালি  ও বিশেষ করে নিম্নবর্ণ  বাঙালি  উপহার পাবে  তাদের গৌরবান্বিত  ইতিহাস ।
এছারাও  বাংলাদেশের  বরিশাল ( বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ )  বাঙালি ও  সারা দুনিয়ার  হিন্দুদের  জন্যে  একটি  ঐতিহাসিক ও প্রাকিতিক  দুর্গম  ভ্রমনস্তল হিসাবে পরিচিত হবে ।
যার মাধ্যমে ওই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও  হতে পারে ।
নতুন করে  হিন্দু মন্দিরগুলো ও  ঐতিহাসিকস্থল গুলো পরিচিতি  পাবে ।

মুখবন্ধ- এই প্রোজেক্ট কোন রাজা বা শাসক বা কোন ধর্ম বা বর্ণ বা তাদের ইতিহাসের তুলনায় প্রাগৈতিহাসিক ওই  অঞ্চলের  সাধারণ মানুষ ও তাদের মহান  ইতিহাস কে প্রাধান্য দেবে । এই  ইতিহাসের  পুনঃ উদ্ধারের জন্নে সকল  বাঙ্গালীর   সাহায্য কামনা করি


সুজয় কুণ্ডু
কোলকাতা
ফোণ- ৯২৩১৯৪২৬০১

THIS PROJECT'S WRITEUP COPYRIGHTED TO BISAS
(Bangiya Itihas o Sanskriti Anusandhan Samiti)
AND SUJAY KUNDU



1 comment:

  1. এই প্রোজেক্টের সফলতা কামনা করি

    ReplyDelete